কল্পনা করুন আপনি তুরস্কে পড়াশুনার মাঝেই পুরো ইউরোপ ঘুরছেন, মধ্য এশিয়া ঘুরছেন অথবা পড়ছেন তুরস্কে আপনার পছন্দের আরেকটি ভার্সিটিতে। আর এসবের জন্য আপনার কোন টাকাই খরচ করতে হচ্ছে না। আপনি যে কষ্ট করে ঘুরছেন সেজন্য বরং আপনাকেই পকেট খরচ দেয়া হচ্ছে। বিষয়টা আকাশ কুসুম কল্পনা মনে হলোও সত্যি। এটি সম্ভব তুরস্কে। তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত যে কোন শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগামের আওতায় সহজেই যেতে পারে ইউরোপসহ অনেক দেশে। আজকের ব্লগে বিস্তারিত থাকছে এই বিষয়ে।
তুরস্কে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিজেদের দেশের ও বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে অনেকগুলো স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগাম রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইরাসমাস প্লাস, ফারাবী ও মেভলানা।
প্রথমেই আসি ইরাসমাস প্লাস নিয়ে। এটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে তুরস্কের একটু চুক্তি। এর আওতায় ইউরোপের শিক্ষার্থীরা এক সেমিস্টার তুরস্কে পড়তে আসে। তুরস্কের শিক্ষার্থীরাও এক সেমিস্টার ইউরোপে পড়ে আসতে পারে। প্রতিটি বিভাগের সাথে আলাদা আলাদা দেশের নির্দিষ্ট বিভাগের চুক্তি রয়েছে। শিক্ষার্থীরা সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে পারে। পড়াশুনা শেষ করে আসলে ক্রেডিটও যুক্ত হয়। ফলে পড়াশুনা ও ঘুরাঘুরি দুটোই সম্ভব। একবার ইউরোপের সেনজেনভুক্ত কোন দেশে প্রবেশ করলে সেনজন ভিসায় ঘুরে আসতে পারে অনেকগুলো দেশ।
ইরাসমানের আওতায় দুটো প্রোগাম রয়েছে। একটিতে পড়াশুনা করা যায়। আরেকটিতে ইউরোপে ইন্টার্ন করার সুযোগ রয়েছে। ইরাসমাসের অধীনে ৩ মাস থেকে ১২ মাসের বিভিন্ন প্রোগাম রয়েছে । ইরাসমাস প্লাসে চান্স পেলে মাসিক স্টাইপেণ্ড দেয়া হয়। সেই টাকায় প্লেনভাড়া, থাকা খাওয়া অনায়াসে হয়ে যায়। ইরাসমাস প্লাসের জন্য প্রতি বছর আবেদন জমা নেয়া হয়। আবেদনকারীদের একটি পরীক্ষা দিতে হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়।
মেভলানা: তুরস্কের আরেকটি এক্সচেঞ্জ প্রোগাম হলো মেভলানা। মাওলানাকে তুর্কিস ভাষায় বলে মেভলানা। মাওলানা জালালুদ্দিন রুমির নামে এই প্রোগাম। তুরস্কে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে অনেক বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করতে পারে বিদেশে। সে ক্ষেত্রেও তারা আর্থিক সহায়তাও পায়। তবে একটি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়।
ফারাবী: ফারাবী প্রোগামের আওতায় তুরস্কে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পড়তে পারে তুরস্কে অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে। যদি গবেষণার প্রয়োজনে অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয় তাদের জন্য এই উপযুক্ত।
উপসংহারে বলা যায় তুরস্কে পড়াশুনার অনেক সুবিধার মধ্যে বড় একটি সুবিধা হলো এই সব এক্সচেঞ্জ প্রোগাম। পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা অন্যদেশে দিয়ে নতুন পরিবেশে, নতুন সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পারে। ইন্টার্ন করতে পারে বিশ্বের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানে। চাকরিও খুজে নিতে পারে মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানীতে। ফলে তুরস্কে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের অন্যতম আকর্ষণ থাকে এই সব এক্সচেঞ্জ প্রোগাম।